একজন শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সিলেটের বেসরকারি বিদ্যাপীঠ স্কলার্সহোম’র শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষাথীরা। এসময় তারা উপাধ্যক্ষের অপসারণসহ ৫ দফা দাবিও জানিয়েছেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর)সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এতে অভিভাবকরাও অংশ নেন। দাবি পুরণে স্কলার্সহোম কর্র্তপক্ষ আশ্বাস প্রদান করলে সোমবার সকাল দশটা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্কলার্সহোম’র শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়াল (১৯)-এর মরদেহ নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
তবে এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আজমানের মত্যুর খবরে ছড়িয়ে পরার পর থেকেই স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার সহপাঠী ও ওই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এমনকি অনেক সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও স্কলার্সহোমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাকেদের সাথে খারাপ আচরণ, পর্যাপ্ত ও দক্ষ শিক্ষক না থাকা, শিক্ষার্থী খারাপ করলে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আজমানের দাফণ সম্পন্ন হয়। আজমানের মায়েরও অভিযোগ, প্রি-টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করায় আজমাননকে অপমান করে স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান ও কলেজ থেকে ছাড়তে প্রদান করা হয়। এ মৃত্যুর প্রতিবাদে আগে থেকেই রোববার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করার ঘোষণা দেয় স্কলার্সহোমের শিক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আঁচ করতে পেরে শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসে সবধরণের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু বন্ধের নির্দেশনা অমান্য করে রোববার সকেলেই স্কলার্সহোমের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রথমে ফটক বন্ধ রাখলেও পরে শিক্ষার্থীদের দাবির ,মুখে ফটক খুলে দেয় স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ। এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা আজমানের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও দায়িদের শাস্তির দাবি জানিয়েএশ্লাগান দিতে থাকেন। পরে কলৈজ অধ্যক্ষের সাথে দেখা করে ৫ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আজমান ও তার অভিভাবকদের অপমানের কারণে উপাধ্যক্ষ হোসেন চৌধুরীকে অপসারণ করতে হবে। একই অভিযোগে শ্রেণী শিক্ষক শামীম হোসেনকে অপসারণ করতে হবে। কোন শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে কোন সমস্যার সম্মুখীন কিংবা হেনস্থা করা যাবে না। পরীক্ষা কমিটির রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজমানের মৃত্যুর জন্য স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষের দায় রয়েছে।
তাদের খারাপ আচরষেণর কারণেই আজমান মারা গেছে। এ ঘটনায় যাদের দায় রয়েছে তাদের বহিস্কার করতে হবে। তারা বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সোমবার সকাল পর্যন্ত তাকে সময় দিয়েছি। এসময়ের মধ্যে দাবি পুরণ না হলে সোমবার সকাল ১০ টা থেকে আবার আমরা আন্দোলনে নামবো। তবে আজমান ও তার পরিবারের সাথে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে স্কলার্সহোম’র শাহী ঈদগাহ শাখার অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মুনীর আহমেদ কাদেরী (অব.) বলেন, শিক্ষার্থীরা আজ কিছু দাবি দিয়েছেন। আমরা এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।