রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ অপরাহ্ন

দুই বাংলাদেশিকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কাছে বিক্রি : ইউক্রেন যুদ্ধে ১ জন নিহত

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

প্রথম সকাল ডেস্ক:- সংসারের সচ্ছলতা ও ভাগ্য বদলের আশায় রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নাটরের দুই যুবক হুমায়ুন ও রহমত।

সম্পর্কে তাঁরা শ্যালক ও দুলাভাই। কিন্তু রাশিয়ায় নিয়ে প্রতারকরা তাঁদের বিক্রি করে দেয় সামরিক বাহিনীর কাছে।

পাঠানো হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। যুদ্ধে প্রাণ হারায় শ্যালক হুমায়ুন। আর দুলাভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও সে বিভীষিকা কাটিয়ে দেশে ফেরার আকুতি তার।

এ ঘটনায় কাতর এখন হুমায়ুন রহমতের পরিবার। দালাল চক্রের প্রলোভনে জমিজমা স্ত্রীর গহনা এবং উচ্চসুদে ঋণ নিয়ে রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার দুর্গম হুলহুলিয়া চৌধুরীপাড়া গ্রামের রহমত আলী ও তার শ্যালক হুমায়ুন কবির।

গত বছরের ১৮ অক্টোবর দালালরা তাঁদের নিয়ে রাশিয়ায় বিক্রি করে দেয় সেই দেশের সামরিক বাহিনীর হাতে। সেখানে সল্প সময় প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁদের পাঠিয়ে দেয়া হয় যুদ্ধের ময়দানে। গত ২৬ জানুয়ারি ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় প্রাণ হারায় হুমায়ূন কবির।

সেখান থেকে মুঠোফোন মেসেজে শ্যালক হুমায়ূনের মৃত্যুর খবর জানিয়ে নিজেকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে নিতে আকুতি জানায় রহমত। হুমায়ূনের লাশ ও রহমতকে ফেরত পেতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে দরিদ্র ও অসহায় পরিবারটি।

এ ঘটনায় নাম এসেছে ড্রিমহোম ট্রাভেলস এবং তামান্না ট্রাভেল এজেন্সি নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের।

রহমত আলী তার পরিবারের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভয়েস রেকর্ড পাঠিয়েছেন। রেকর্ডটিতে রহমতকে বলতে শোনা যায়, আমি খুব বিপদে আছি। কালকে আবার আমাকে যুদ্ধে লিয়া যাবি।

যুদ্ধে লিয়া গেলি নির্ঘাত মৃত্যু। আমরা তো যুদ্ধের কোনো কলাকৌশল জানি না। ১৫ দিনের ট্রেনিং দিয়া আমাকে যুদ্ধে লিয়া যাইতেছে। এর আগেও একবার লিয়া গেছে। তোমার মামা (নাটোরের কবীর) মারা গেছে আমার কোলের ওপর।

আমি কোনো হালে পলায়ে এসেছি। এহন ট্রেনিং দিয়া আবার লিয়া যাইতেছে। একবার গেছি, আর যাইতে পারবো না। আমাক বাঁচা।

যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যাওয়া কবীরের ভাগিনা মিজানুর রহমান বলেন, আমার মামা কবীর আর খালু রহমত আলী একসঙ্গে রাশিয়া গিয়েছে। আমার মামা মারা গেছে।

খালু ভয়েস মেসেজে বলেছে, তার হাতের ওপর আমার মামা মারা গেছে। এ অবস্থায় থাকলে খালুও মারা যাবে।

তিনি বলেন, মামা-খালুসহ আরও ১০ জনকে প্রথমে সৌদী আরব নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে আমাদের পরিবারের কাছে আরও টাকা দাবি করে ড্রিমহোম ট্রাভেলস।

তারা বলে, টাকা না দিলে রাশিয়ায় পাঠাবে না, বাংলাদেশেও ফিরিয়ে আনবে না। বাধ্য হয়ে পরিবারের গহনা, জমি বিক্রি করে টাকা পাঠিয়েছে।

মামা মারা গেছে, আমরা চাই মামার লাশ আর খালুকে দেশে ফিরিয়ে আনতে। সরকারের কাছে অনুরোধ, তারা যেন ব্যবস্থা নেন।

মিজানুর রহমান আরও বলেন, রাশিয়া থেকে যখন বললো তাদের যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে, আমরা ট্রাভেল এজেন্সিতে যোগাযোগ করেও পাইনি। তাদের অফিসে গিয়ে দেখি তালা লাগানো। এখন সরকার ছাড়া আমাদের কোনো ভরসা নেই।

এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এজেন্সি ড্রিমহোম ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান আবুল হাসান ও তামান্না ট্রাভেল এজেন্সির মুঠোফোনে একাধিক দিনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ নিয়ে বলেন, এ ঘটনায় আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাশিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরে জানানো হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।

তিনি বলেন, যে এজেন্সির মাধ্যমে গেছে তাদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার জন্য আমরা গোয়েন্দা সংস্থাকে বলেছি। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেবো।

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০১ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৩০ অপরাহ্ণ
  • ১৮:২৬ অপরাহ্ণ
  • ১৯:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ
©2020-2025 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102