মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন

সামাজিক অবক্ষয় ও অসহিষ্ণুতার আরেক নাম কিশোর গ্যাং

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫
  • ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বর্তমানে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হিরোইজম বা বাহাদুরি, কাঁচা টাকা পয়সা, মাদকাসক্তি, সাংস্কৃতিক চর্চার নামে ছেলেমেয়েদের অবাধে মেলামেশার তীব্র আকর্ষণ ইত্যাদি হাতছানি দিয়ে ডাকায় দ্রুত এসমস্ত গ্যাং এবং তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়ছে।

সেই সাথে নানান ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পথভ্রষ্ট হয়ে কিশোররা কিশোর গ্যাংয়ে নাম লেখাচ্ছে। ফলে সমাজকে ভেতরে ভেতরে উইপোকার মত খুবলে খেয়ে ফেলছে এই অশুভ চর্চা।

কিশোর তরুণ সমাজ দেশের ভবিষ্যৎ। দল বেঁধে তাদের সন্ত্রাসী হয়ে ওঠা খুবই চিন্তার বিষয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি উচ্ছন্নে যায় তাহলে শেষ হয়ে যাবে পরিবার, সমাজ, সর্বোপরি রাষ্ট্র।

কিশোর গ্যাং যদি এখনই প্রতিহত বা নির্মূল করা না যায় তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্র এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। এক্ষেত্রে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

সন্ধ্যার পর দলবদ্ধ কিশোরদের রাস্তাঘাটে মার্কেটে দেখলে কৈফিয়ত চাইতে হবে এবং ঘরে যাওয়ার জন্য বাধ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মেশে তা খেয়াল রাখার দায়িত্ব অবশ্যই তাদের।

সামাজিক এবং পারিবারিক সম্পর্কের জায়গাটা দুর্বল হয়ে গেলে তা দ্রুত কিশোরদের অপরাধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ঘরে স্বামী–স্ত্রী নিত্য ঝগড়া কলহ আর বিবাহবিচ্ছেদ এবং অভিভাবকদের অসচেতনার কারণে সন্তান বেপরোয়া হয়ে বিপথে চলে যায়। অর্থাভাব যেমন একটি কিশোরকে অপরাধ জগতের দিকে ধাবিত করে, তেমনি অর্থের প্রাচুর্য ও কখনো অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেবন করছে দামি সিগারেট, ভয়াবহ মাদক।

সমাজ চিন্তকরা মোটা দাগে সামাজিক অবক্ষয়, ধর্মীয় মূল্যবোধের অবমাননা, দুর্বল কাঠামোর শিক্ষানীতি এবং রাজনৈতিক নীতিহীনতাকেই এই কিশোর গ্যাং নামক সামাজিক দুর্যোগের কারণ হিসেবে গণ্য করছেন।

একসময় পাড়ার বয়স্কদের ছোটরা সম্মান করত। অন্যায় করতে দেখলে পাড়ার বড়রাও ছোটদের শাসন করতে পারত। এখন সেই ঐতিহ্য আর নেই। ভেঙ্গে পড়েছে সামাজিক মূল্যবোধ।

একটি সমাজের জন্য সামাজিক মূল্যবোধ এবং সহনশীলতা খুবই জরুরি। সহনশীলতার উপর নির্ভর করে সমাজের স্থিতিশীলতা। সহনশীল মনোভাব মানুষকে অস্থিরতা থেকে মুক্ত করে।

তাই সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকেই অপসংস্কৃতি এবং অসহিষ্ণুতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে। তবেই সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। দেশ ও জাতি ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে নিস্তার পাবে।

যে বয়সে কিশোরদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা, তারা জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে। কিশোর বয়স হচ্ছে স্বপ্ন পুরনের বয়স, স্বপ্ন দেখার বয়স।

একটা ফুল যখন ফুটতে শুরু করে তখন যদি আঘাত করা হয়, তাহলে ফুলটা অকালে ঝরে যায়। কিশোররা আমাদের আগামীর কর্ণধার তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করা আমাদের দায়িত্ব।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2020-2025 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!