শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব বা উসকানিমূলক তথ্য ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যেকোনো চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রংপুরের তালতলা নবাবগঞ্জ রোডে করুণাময়ী কালীবাড়ি মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির একটি পাঁয়তারা চলছে। আমাদের আইসিটি বিভাগসহ সবগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার এসব বিষয় সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে। কোনো পোস্ট বা তথ্য আমাদের নজরে এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকৃত ঘটনা হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি মিথ্যা তথ্য হয় তবে গুজব ছড়ানো ব্যক্তির বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য প্রচার হলেই তা যাচাই-বাছাই না করে বিশ্বাস করবেন না।
কোনো তথ্য পেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করুন, তারা তাৎক্ষণিকভাবে ভেরিফাই করবে। র্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে এবং ২ অক্টোবর বিজয়ার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে। এই সময়কে সামনে রেখে র্যাব ফোর্সেস সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
শহিদুর রহমান জানান, দেশব্যাপী সব পূজাম-পের নিরাপত্তায় র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হবে। টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পূজাম-প ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সার্বক্ষণিক ডগ স্কোয়াড, স্যুইপিং কার্যক্রম, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম এবং র্যাব ¯ স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো ইউনিট প্রস্তুত থাকবে। তিনি বলেন, প্রতিটি ব্যাটালিয়ন তাদের নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে স্থানীয় পূজা কমিটি, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে।
র্যাব সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে সারাদেশের নিরাপত্তা কার্যক্রম তদারকি করা হবে। র্যাব মহাপরিচালক জানান, বিগত বছরগুলোতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে দুষ্কৃতিকারীদের হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় র্যাব তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে জড়িতদের আইনের আওতায় এনেছে।
এ বছরও যদি কেউ পূজাম-পে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, ডাকাতি বা চুরি করার চেষ্টা করে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাঙালির সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। আমরা চাই এই উৎসব নির্বিঘ্নে হোক, যাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারেন।