সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারসহ দেশের ১২ জেলায় আটটি আইনের ক্ষেত্রে আর সরাসরি মামলা গ্রহণ করবে না আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে এ বিধান কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে মামলা দায়েরের আগে সংশ্লিষ্ট জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সিলেটে নতুন এ বিধির উদ্বোধন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এর আগে গত মঙ্গলবার জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এ নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। গণ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- আইন সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ (২০২৫ সনের ৩৫ নং অধ্যাদেশ) এর ধারা ১ এর উপ-ধারা (২) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি জেলায় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০ (২০০০ সালের ৬ নং আইন) এর ২১ খ ধারার বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান কার্যকরের দিন ধার্য করা হয়েছে।
ধার্য দিন অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে এই বিধান কার্যকর করা হয়েছে। সংশোধিত আইনের তফসিল অনুযায়ী যে আট আইনের অধীনে উদ্ভুত বিরোধ বা অভিযোগের বিষয়ে আদালতে সরাসরি মামলা করা যাবে না, সেগুলো হলো-পারিবারিক আদালত আইন, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, সহকারী জজ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত বণ্টন সম্পর্কিত বিরোধ, স্টেট অ্যাকুজিশিন অ্যান্ড ট্যানেন্সি অ্যাক্ট, নন এগ্রিকালচারাল ট্যানেন্সি অ্যাক্ট, পিতামাতার ভরণপোষণ আইন, যৌতুক নিরোধ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়-উল্লেখিত ধারার বিধানমতে চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার (বিচারক) কর্তৃক প্রত্যায়িত প্রতিটি মধ্যস্থতা চূক্তি চূড়ান্ত, বলবৎযোগ্য এবং পক্ষগণের উপর বাধ্যকর ও আদালতে ডিক্রি অথবা ক্ষেত্রমত, চূড়ান্ত আদেশ হিসেবে গণ্য হবে। বুধবার বিকেলে নতুন এ বিধির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা যা করেছি, তা দেশের ইতিহাসে নেই।
কম সময়ে যে পরিবর্তন করেছি, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার যদি তা ধরে রাখে তাহলে দেশে ন্যায়বিচার আরও বৃদ্ধি পাবে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের আইনগত প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি বাড়বে। মামলার জট কমাতে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগকে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে দরিদ্র মানুষের জন্য অপূর্ব সুযোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কয়েকটি নতুন পরিবর্তন এনেছি।
প্রথমত, মামলা দায়েরের আগে লিগ্যাল এইডে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেখানে সমাধান না হলে আদালতে যেতে কোনো বাধা থাকবে না। আর দ্বিতীয়ত,কয়েকটি আইন সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যেখানে লিগ্যাল এইডে যাওয়া বাধ্যতামূলক। তৃতীয়ত, আগে লিগ্যাল এইডে দায়িত্বে থাকতেন একজন সিনিয়র সহকারী জজ। এখন থাকবেন সিনিয়র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ।