ফটো সাংবাদিকতার আড়ালে অনোয়ারুজ্জা মানের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কাজ করছেন রেজা রুবেল। খোলস পাল্টিয়ে বর্তমানে বিএনপি নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
অথচ গত ৫ আগষ্টের পুর্ব পর্যন্ত তিনি ছিলেন যুবলীগ নেতা। অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন মিছিল মিটিংএ। সিলেট সিটির সাবেক পলাতক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের দাপটে বেপরোয়া ছিলেন তিনি।
আনোয়ারুজ্জামান ব্যাক্তিগত ফটো সাংবাদিক হওয়ায় তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন। যুবলীগ ক্যাডার সাজলু লস্করের সিলেট প্রতিদিন হয়ে কাজ করেন। সেই সাথে তিনি স্হানীয় একটি দৈনিকের ফটো সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত।
নিজেকে ফটো সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তিনি মুলত জুলাই আগষ্টে ছিলেন ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মারমুখি অবস্হানে। ফটো সাংবাদিকতার আড়ালে ছিল তার ভয়ংকর রূপ।

বন্ধু শাফায়াত খান ও কর্তা আনোয়ারুজ্জামানের সাথে রেজা রুবেল।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনে তার চলাফেরার ভঙ্গি দেখে মনে হত তিনি আনোয়ারুজ্জামানের আপন ভাই! তার ক্ষমতার দাপটে অসহায় ছিল প্রশাসন তথা অন্যান্য সাংবাদিক।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে নানা প্রকার অভিযোগ থাকার পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন রেজা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে সাধারন ছাত্রদের বাসা বাড়ি পুলিশকে দেখিয়ে দেয়ার অভিযোগ।
রেজা রুবেল ও সাজলু লস্করেে মিছিলের ভিডিও দেখুন এখানে ক্লিক করে
পলাতক মেয়রের বিশস্ত সংঙ্গী হিসাবে নিজেকে তুলে ধরার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দলীয় বিভিন্ন কর্যক্রমের ছবি পোস্ট করে নিজের সাংবাদিকতা ও মেয়রের পরিচয়কে হাতিয়ার বানিয়ে চাঁদাবাজি সহ নানা অপরাধমুলক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। বর্তমানেও গোপনে আওয়ামিলীগের হয়ে কাজ করছেন।
ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন দফতরে হুমকি দামকি দিয়ে সরকারী টেন্ডারবাজিতে এই রেজা রুবেল ছিল অনন্য। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে আওয়ামীলীগ দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার সাথে সাথে সাথে যুবলীগ নেতা রেজা রুবেল নিজেকে রাজনৈতিক চাপ মুক্ত রাখার জন্য সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি’র একাংশে সাথে সক্ষতা গড়ে তোলেন।

রাহেল সিরাজ ও আনেয়ারুজ্জামানের সাথে রুবেল।
বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, রেজা রুবেল আনোয়ারুজ্জামান ও সাজলু লস্করের এজেন্ডা বাস্তবায়নে চক্রান্ত করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবকদল, যুবদল ও ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এরি ধারাবাহিকথায় রেজা রুবেলের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আজিজুল হোসেন আজিজের ওপর হামলার অভিযোগে উঠেছে।
ঘটনার পরের দিন শনিবার (১২ এপ্রিল) স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী মোস্তাক আহমদ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে ২৪ জনের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় রেজা রুবেল ৭ নাম্বার আসামী হিসেবে উল্ল্যেখ করা হয়।

৪ আগষ্ট যুবলীগের মিছিলে রেজা রুবেল ও সাজলু।
সুত্র বলছে আনোয়ারুজ্জামানের ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফারের সুবাদে সিলেটের জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন রেজা রুবেল। লন্ডন থেকে আনোয়ারুজ্জামান রুবেলকে দিয়ে সিলেটে ঘোলাটে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরী করাচ্ছে। সেই সাথে যে কোন ঘটনা যাতে বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া যায় সে জন্য রেজাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা কর্মীর ভাষ্যমতে, নগরীর ধোপাদিঘীপারে শাফায়েতের নেতৃত্বে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মিছিল করে। সেই মিছিলের ব্যাকগ্রাউন্ডে ছিলো রেজা রুবেল। মিছিল কভারেজ, সংবাদ মাধ্যমে ফুটেজ পাঠানো সব কিছু তার হাত ধরে।
এদিকে মাছিমপুরের ঘটনার পর রেজা রুবেল তার ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার দেন। সেই ভিডিওতে মাছিমপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী দিপু ও মঞ্জুর বাবা হান্নান মিয়া একতরফা ভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের দায়ী করে বক্ত্যব্য রাখেন।
এই বক্ত্যব্যটি সুকৌশলে প্রচার করেন রেজা রুবেল। তার উচিত ছিলো একই ভিডিওতে বিএনপি কর্মীদেরও বক্তব্য নেয়া। কিন্তু সেটা তিনি করেননি। নেতা কর্মীদের দাবী এতে বুঝা যায় অনোয়ারুজ্জামানের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এই কাজটি করে যাচ্ছেন রেজা রুবেল।
সুত্র বলছে রেজা রুবেল এসব কাজের জন্য আনোয়ারুজ্জামানের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পান। রেজা রুবেল এর আগে আওয়ামীলীগ এমপি বোমা মানিকের হয়ে কাজ করতেন। তখন কিনএকটা ঝামেলার কারনে তাকে জেলে ঢুকিয়ে দেন বোমা মানিক।
তবে রেজা রুবেল নিজেকে নির্দোশ হিসেবে গনমাধ্যমে বলে আসছেন। তিনি গনমাধ্যমে জানান, ঘটনার সময় তিনি কক্সবাজার ছিলেন। পরের দিন তিনি সিলেটে আসেন।
এদিকে আজিজুল হক আজিজের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর যুবলীগ ক্যাডার মঞ্জুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক।