নিজস্ব প্রতিবেদক:- সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির নামে ভুয়া কমিটির আত্মপ্রকাশের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সামাজিক য়োগাযোগ মাধ্যমে এ অপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, আব্দুর রহিম ও শেখ এমরান হেসেন জুনু, আবুল কালাম ও জিয়াউল হক পলাশ এবং জামায়াত নেতা লোকমান আহমদ ও আমিরুজ্জামান জোয়াহিরের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে ৩ টি কমিটি। এই তিন কমিটির কে বৈধ আর কে অবৈধ এ নিয়ে চলে আসছিল গুঞ্জন।
প্রথম সকাল টিম এ নিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করে বিভিন্ন সুত্র থেকে তথ্য নিয়ে জানতে পারে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির আবুল কালাম ও লোকমান আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে অনুমোদন দেয়নি বাংলাদপশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি।
অবৈধ এই কমিটি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে অন্যায়ভাবে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন অনুষ্টানে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পোষ্টার ও ছবি ব্যবহার করে নিজেদের পরিবহন নেতা হিসেবে জাহির করতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলেও সুত্র জানায়।

লোকমান গংদের ভুয়া কমিটি
জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণকারী সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃত্ব নিতে ভুয়া কমিটি ঘোষনা দেন লোকমান আহমদ ও আবুল কালাম গংরা।
সিলেট সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বলেও দাবী করেন লোকমান আহমদ এবং আওয়ামিলীগ নেতা আবুল কালাম।
তবে এ দুই কমিটির কোন বৈধতা নেই বলে জানান আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ। বর্তমান কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, আমাদের কমিটি সঠিক, আমরা ইতিমধ্যে সিলেটের পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসক, লোকাল থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আমাদের কমিটির অনুমোদনের কপি জমা দিয়েছি। তিনি বলেন, আবুল কালাম ও লোকমান আহমদের নেতৃত্বে অবৈধ কমিটি মিথ্যা প্রচারনা চালাচ্ছে। তাদের কমিটির কোন বৈধতা নেই। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করব।

অনুমোদনকৃত সঠিক কমিটি
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এম এ বাতেন জানান, গত ১০ অক্টোবর আব্দুর রহিমকে সভাপতি ও শেখ এমরান হেসেন জুনুকে সাধারন সম্পাদক করে ৪০ সদস্যেের সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটি দুই বছরের জন্য ঘোষনা করে সিলেটের বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে চিঠি প্রেরন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই কমিটি ব্যাতিত অন্য কোন কমিটি বৈধ নয়। যে বা যারা কমিটি নিয়ে দন্ধ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্হা নেয়া হবে।
এদিকে আবুল কালামের দাবীকৃত ভুয়া কমিটির সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে রয়েছে সিলেটে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের মামলা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর) কোতোয়ালি থানায় এ মামলাটি (৩৭(০৯) ২০২৪) দায়ের করা হয়। ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৩/৪সহ দণ্ডবিধির ১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১০৯/১১৪ ধারায় দায়ের হওয়া এ মামলায় আসামী হলেন জিয়াউল কবির পলাশ।
অপরদিকে আবুল কালাম ও জিয়াউল কবির পলাশের বিরুদ্ধে রয়েছে অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ। এ বিষয়ে গত (১৭ আগস্ট) সিলেট-ঢাকাদক্ষিণ বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির অফিসে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় বক্তারা বলেন, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ বিগত ২০১৬ হতে ২০২৪ ইং (জুন) পর্যন্ত জেলা মালিক সমিতির আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিয়ে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বৈষম্যমূলক ভাবে সাধারণ মালিকদের অবমূল্যায়ন করেন।
নির্বাচন বিহীন দলীয় ব্যক্তি দ্বারা কমিটি গঠন করে বে-আইনী ভাবে চাঁদা আদায় করে নিজেদের এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চাঁদা দিয়ে অবৈধ কমিটি বহাল রাখেন। যা সড়ক পরিবহন আইনের পরিপন্থী।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে সাধারণ মালিক কোন আয়-ব্যয়ের হিসাব নিতে পারেনি। বরং এ ব্যাপারে কথা বললে, বিভিন্ন ধরনের হয়রানী ও দমন পীড়নের ব্যবস্থা নিতেন বলে জানানো হয়। সভায় বর্তমান কমিটি বিগত বছরগুলোতে প্রায় ৩ কোটি ২২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানানো হয়।