নিজস্ব প্রতিনিধি:- সিলেটের জিন্দাবাজারের কাস্টমসের বিভাগীয় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জব্দকৃত মালামাল চুরির সন্দেহে একজনকে আটক করেছে জনতা। আটককৃতের নাম মঞ্জুর হোসেন বলে জানা গেছে। তিনি কাস্টমস অফিসের নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত অনুমান ১১টার সময় এ ঘটনা ঘটে।
স্হানীয়রা জানান, রাতের আধারে কাস্টমস অফিসের একজন নিরাপত্তা কর্মী সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক জব্দকৃত মালামাল বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় স্হানীয় জনতা দেখে ঐ নিরাপত্তা কর্মীকে আটক করেন।
খবর পেয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যম কর্মীরা সেখানে উপস্হিত হন। উপস্হিত জনতা জানান, প্রতিদিনি এরখম মালামাল বের করে সে নিয়ে যায়। আজ থাকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।
তবে আটক মঞ্জু হেসেন গনমাধ্যমকে জানান, তিনি বিজিবি সদস্যদের বলে মালামাল নিচ্ছেন। তিনি বলেন, মালামাল গুলো মধ্যেে কিছু খাদ্যদ্রব্যের পেকেট খোলা ছিল, সম্ভবত বিজিবি এখান থেকে খেয়েছে!
তাই তিনি বিজিবিকে বলে মালামাল গুলো বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্হলে পৌছলে আটক মঞ্জু হোসেনের কাছে ভারতীয় শাড়ি ও অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।
পরে পুলিশ কাস্টমস অফিসের ভিতরে গেলে রাতের বেলা কর্তব্যরত অবস্হায় কাস্টমস কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন মিয়াকে পান। পুলিশ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ফোন দেয়ার কথা বললে প্রথমে তিনি নানা তালবাহানা করেন। পরে জনতার চাপে ফোন দিতে বাধ্য হন।
জালাল উদ্দিন মিয়া এডিসি ২ রিজভী আহমদকে বিষয়টি জানান। রিজভী আহমদ মোবাইলে জালাল উদ্দিনকে বলেন, আজ বিকেলে ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে। এদিকে নিরাপত্তা প্রহরী মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

জালাল উদ্দিনের সাথে জনতা ও পুলিশের কথাবার্তার ছবি
নগরীর কুয়ারপারের আরিফ ঘটনার সময় উপস্হিত পুলিশ ও গনমধ্যমকে জানান, কাস্টমস থেকে জব্দকৃত ভারতীয় অবৈধ পণ্য সরিয়ে অন্যত্র বিক্রির সাথে কাস্টমস অফিসের গুদামের দায়ীত্বে থাকা জালাল উদ্দিন মিয়া জড়িত রয়েছেন।
উনি প্রতিদিন কাস্টমস থেকে মালামাল নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেন। এমনকি জালাল উদ্দিন মিয়া এসব কাজে কেউ তাকে বাধা যাতে না দেয় সেজন্য তিনি মাঝে মধ্যে ভারতীয় বিভিন্ন পন্য আরিফসহ অন্যান্যদের গিফট দিয়ে থাকেন।
এসময় আরিফ বলেন, তিনি বাদী হয়ে জালাল উদ্দিনের নামে মামলা করবেন। গিফট দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন বলেন, আমি কি গিফট দিতে পারিনা!!
স্হানীয় কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন থেকে রাতের আধারে এভাবে জব্দকৃত মালামাল বাহিরে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে আজ সরেজমিনে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন মিয়া বলেন, আমার উপর তোলা অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই, আমাদের অফিস সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এখানে মালামাল বের করে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, অফিসের জব্দকৃত মালামালের হিসাব প্রতিদিন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দিতে হয়।
জব্দকৃত মালামাল নিলাম হচ্ছেনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিলাম দিলে জামেলা হয়। নিলামে অংশ নেয়া লোকজন অযথা মারামারি করে তাই নিলাম আপাতত বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক জানান, অভিযোগ পেয়ে নিরাপত্তা প্রহরীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। আজ কাস্টমসের কর্কর্তারা এসে বিষয়টির সমাধান দিবেন।